Monday, December 30, 2013

সংগ্রামী বাঙালী


দীর্ঘ পৌনে দুইশ বছর বৃটিশ শাসনের পর ১৯৪৭ সালে আমাদের এই ভূখণ্ডটি ঔপনিবেশিকতা থেকে মুক্তি পায়। পরাধীনতা কত নিষ্ঠুর এটা এই অঞ্চলের মানুষ খুব উপলব্ধি করেছে। একটা পরাধীন মানুষের নিজের বলতে কিছু থাকে না। এমনকি তাঁর মৌলিক চাহিদাগুলোও নির্ভর করে অন্যের করুণার উপর। এভাবেই আমাদের পূর্ব প্রজন্ম মাসের পর মাস বছরের পর বছর এমনকি শত শত বছর পার করে। একই সাথে শোষকের বিরোদ্ধে লড়াই, সংগ্রাম করেছে। অবশেষে অনেক রক্তের, প্রানের বিনিময়ে ভারতীয় উপমহাদেশ নামে ফিরে আসি। স্বাভাবিক ভাবেই বৃটিশরা আমাদেরকে অনেক পিছিয়েছে। আমরা চলমান সভ্যতার সাথে খাপ খাওয়াতে এখন আর পারছি না। আমাদের মহান শ্রমিকরা দিনরাত খেটে পরিশ্রম করেও তথাকথিত শোষক উন্নত বিশ্বের সাথে কুলিয়ে উটতে পারছে না। ফলে এই দীর্ঘকালে আমরা অনেক পিছিয়ে পরেছি। যার জন্য সম্পূর্ণ দায়ী আজকের পৃথিবীর তথাকথিত উন্নত দেসগুলো। এখনো পর্যন্ত আমরা আমাদের মৌলিক চাহিদা পূরণ করতে পারছি না। এর জন্য নিশ্চয়ই আমরা দায়ী নই, আমাদের মহান শ্রমিক, শ্রমজীবী, কৃষিজীবী, খেটে খাওয়া গণমানুষ দায়ী নয়। প্রত্যক্ষভাবে আজকের পৃথিবীর উন্নত দেশগুলোই দায়ী। ১৯৪৭ সালে এই অঞ্চলের কিছু লোভী, মোসাহেব, বাটপার, সুবিধাবাদী, প্রতারক, ব্যক্তিত্বহীন, ক্ষমতালোভী মনুষ নিজেদের ব্যক্তিগত লাভের আশায় ধর্মের কথা বলে দ্বিজাতি তত্ত্বের নামে পুনরায় এই অঞ্চলটি দুই ভাগে বিভক্ত করলো। ফলে আরও কিছু লোক আলাদা আলাদা ভূখণ্ডের লুটপাটের দলিল পেল। অন্যদিকে বহির্বিশ্ব তাদের নিজেদের সুবিধার কথা চিন্তা করে বিভাজন হওয়ার পথ সুগম করে তুলে। কিন্তু তৎকালীন পূর্ব বাংলার মানুষের জীবনের কোন উন্নতি তো দূরের কথা বাস্তবতা দেখা গেল ঠিক উল্টো। পাকিস্থান রাষ্ট্রটি জন্ম নেয়ার সাথে সাথে শুরু হয় আবার নিপীড়ন, নির্যাতন, শোষণ। মানুষ দিশেহারা। এভাবে প্রজন্মের পর প্রজন্ম সুখ কাকে বলে বুঝতে পারেনি, উপলব্ধি করতে পারেনি। তৎকালীন পূর্ববাংলা বর্তমানে বাংলাদেশের মানুষ নতুন করে উপলব্ধি করলো ব্রিটিশদের চেয়েও পশ্চিম পাকিস্থানিদের মানসিকতা আরও হীন, কুরুচিপূর্ণ, জঘন্য। এরা অধিকতর শোষক, নিপীড়ক, প্রবঞ্চক, প্রতারক। তাঁরা উপলব্ধি করতে পারে তাঁর তুলনামূলক অধিক নিপীড়কের হাতে পড়েছে। তাঁরা দেখল, শাসক আসে শাসক যায়, শোষক আসে শোষক যায়, তাঁদের অবস্থার পরিবর্তন হয়না। সাধারণ, খেটে খাওয়া, শ্রমিকের অবস্থার পরিবর্তন হয়না। প্রতিটি পদক্ষেপে তাঁরা লাঞ্ছিত হয়, বঞ্চিত হয়। এমনকি ১৯৪৭ সাল থেকে ১৯৫২ সালের মধ্যেই তাদের চরিত্রের হিংস্রতাগুলো দেশের গণ্ডি পেরিয়ে বহির্বিশ্বে ছড়িয়ে পরে। শোষণের মাত্রা যাতে বহির্বিশ্ব বুঝতে না পারে, যাতে বহির্বিশ্বের মানুষ মনে করে পূর্ব পাকিস্থান এবং পশ্চিম পাকিস্থান আন্তরিকতার সাথে খুব ভাল আছে এটা বুঝানোর জন্য পশ্চিম পাকিস্থানের তৎকালীন শাসক কায়েদে আজম জিন্নাহ ঘোষণা দেয়, “উর্দু উর্দুই হবে সারা পাকিস্থানের একমাত্র ভাষা।” না না মানিনা মানব না বলে তাৎক্ষনিক পূর্ব বাংলার মানুষ তা প্রত্যাখ্যান করে। পশ্চিম পাকিস্থানিরা নির্বিচারে গুলি চালায় বাংলা মায়ের বুকে। শহীদ হন রফিক, শফিক, সালাম, বরকত, জব্বার সহ অনেকেই। সংগ্রামী মানুষ আবার লড়াই করেন, আরার খুন হন, আবার রক্ত দেন। এবার পূর্ব বাংলার মানুষ বুঝতে পারেন যে তাঁরা বৃটিশদের থেকে মুক্তি পেয়েও আবার পরাধীন হয়েছেন। মানুষ পূর্ব বাংলার মানুষ আবার নতুন করে ভাবতে শুরু করেন। আবার শোষকের বিরোদ্ধে  হাতে হাতিয়ার তুলে নেন। আবার সংগ্রাম করে, আবার জীবন দেয়। সাধারণ নিরস্ত্র বাঙালীর উপর ঝাঁপিয়ে পরে পাকিস্থানি হায়েনা হানাদের বাহিনী। এই আন্দোলন সংগ্রামকে সর্বদাই এই বাংলার সমাজতন্ত্রীমনা মানুষগুলো সর্বদা নেতৃত্ব দিয়েছে। মানুষকে উজ্জীবিত করেছে। পশ্চিম পাকিস্থানি জানলেমরা অত্যাধুনিক অস্ত্র নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েছে। নির্বিচারে সাধারণ মানুষকে খুন করেছে। থরথর করে ধড়ফড় করে চোখের সামনে মা, বাবা, ভাই, বোনকে খুন করেছে। সন্তানের সামনে মাকে, বোনকে সম্ভ্রমহানী করেছে। গুলি করে হত্যা করেছে। ধর্মের নাম করে করেছে যা কখনো কোন ধর্মে অনুমোদন করেনি।
 

Thursday, December 19, 2013

রুশ বিপ্লব; আমাদের শিক্ষা ও করণীয়


অক্টোবর বিপ্লব বা বলশেভিক বিপ্লব পৃথিবীর ইতিহাসের এক রাজনৈতিক বিপ্লব যা ১৯১৭ সালে সংঘটিত মানবেতিহাসের একটি আলোকিত অংশ। এই বিপ্লবকে বলা যায় সমাজতান্ত্রিক স্বপ্নের সূচনা। সাম্যের পথে আজও হাজারো মানুষকে স্বপ্ন দেখায় বলশেভিক বিপ্লব। ১৯১৭ সলের ২৫ই অক্টোবর শুরু হয় এই বিপ্লব যাকে বলা যায় ১৯১৭ সালের রুশ বিপ্লবের ২য় খন্ড। এটি জুলিয়ান বর্ষপঞ্জী অনুসারে ২৫ অক্টোবর ১৯১৭ এবং গ্রেগোরিয়ান বর্ষপঞ্জী  অনুসারে ৭ নভেম্বর ১৯১৭ তারিখে সেন্ট পিটার্সবার্গে একটি সশস্ত্র অভ্যুত্থানের দ্বারা সংঘটিত হয়েছিল। এই বিপ্লবের মূল চালিকাশক্তি ছিল প্রলেতারিয়েবা শ্রমিকশ্রেণী। নেতৃত্বে ছিলেন কমরেড লেনিন, ট্রটস্কি প্রমুখ। ১৯১৬ পরবর্তী সময় জার শাসনের রাশিয়াতে নেমে আসে মহা দুর্যোগ। উৎপাদন হ্রাস পায় ৩৬ শতাংশ। ৫০ শতাংশ কারখানা বন্ধ হয়ে যায়। জীবিকা হারায় বিশাল শ্রমিক শ্রেণী। রাশিয়াতে বেড়ে যায় বৈদেশিক ঋণ। দেউলিয়াত্বের দিকে এগিয়ে যায় দেশটি।
এ সকল অপশাসনের বিরুদ্ধে ১৯১৭ সালের সেপ্টেম্বর মাসে খনি, ধাতু আর রেল শ্রমিকেরা গড়ে তুলে অবরোধ। এতে প্রায় ১০ লাখ শ্রমিক অংশ নে শ্রমিকেরা বিভিন্ন জায়গায় কারখানার নিয়ন্ত্রণ নেয়। দাবানলের মত ছড়িয়ে পড়ে বিপ্লব। ক্রমান্বয়ে বাড়তে থাকে বলশেভিকদের জনপ্রি্য়তা। প্রতিষ্ঠিত হয় শ্রমিকদের শাসন। প্রতিষ্ঠিত হয় সমতাজার শাসনের অবসান হয়।
এর পর এগিয়ে যেতে থাকে সোভিয়েত রাশিয়া। পরিণত হয় বিশ্বের শক্তিধর রাষ্ট্রে। বিপ্লব সর্বশেষে সফল কিনা তা অনেক প্রশ্নের; কিন্তু যে স্বপ্ন তা দেখিয়েছে তা বেচে থাকবে চিরকাল। তাই আজও নিপীড়িত মানুষ স্বপ্ন দেখে, এই বিপ্লবের কথা মনে করে, আর গর্জে উঠে "দুনিয়ার মজদুর এক হ"।
যতই দিন যাচ্ছে অক্টোবর সমাজতান্ত্রিক রুশ বিপ্লবের তাৎপর্য ততই বাড়ছে।  অন্যান্য বহু বিপ্লবের চেয়ে অক্টোবর বিপ্লব সকল দেশ ও জাতির রাষ্ট্রীয় ও ব্যক্তিক জীবনে যে গুণগত পরিবর্তন এনেছে তা পরিমাণে অনেক বেশি ও ব্যাপক।  এটি শুধু দাবি করার বিষয় নয়। এই বিপ্লবের পটভূমি, বিপ্লবী নীতি ও কৌশল, শ্রমিক শ্রেণীর স্বতঃস্ফূর্ত আত্মদান, দোদুল্যমানতার বিরুদ্ধে সচেতন তাত্ত্বিক  ও প্রায়োগিক লড়াই,  সকল আশংকা কাটিয়ে বিজয়ী হওয়া এবং বিজয় পরবর্তীতে বিপ্লবের মূল চেতনা অর্জনে কর্মসূচী প্রণয়ন_ এই সকল কারণেই রুশ বিপ্লব অনন্য। সামন্তবাদী সমাজ ভেঙ্গে নতুনরূপে শোষণকে হাজির করে যখন পুঁজিবাদী সমাজ-ব্যবস্থা তার ডাল-পালা মেলেছে, রুশ বিপ্লব তার মূল ধরে টান দিয়েছে।  রুশ বিপ্লবই শিখিয়েছে ‘শ্রমিক রাজনীতির বিজয় অর্জন করা সম্ভব। বিশ্বাস করতে শিখিয়েছে শোষণমুক্ত শ্রেণীহীন সমাজ গঠন সম্ভব। এই সকল বহুমাত্রিক পরিবর্তন ও বিশ্বাস একটি বিপ্লবী তত্ত্বের যথার্থতারই প্রমাণ। এই তত্ত্ব আমাদের ডাক দেয় শ্রমজীবী মানুষের মুক্ত সমাজ গঠনের। এই তত্ত্বের নাম মার্কসবাদ-লেনিনবাদ।

বুর্জোয়া গণতান্ত্রিক বিপ্লবঃ
১৯০৫-১৯০৭ সালের অভ্যুত্থান ব্যর্থ হলেও স্বৈরতন্ত্রের বিরুদ্ধে তিক্ত সংগ্রামে শ্রমিকশ্রেণীর লব্ধ অভিজ্ঞতা ব্যর্থ হয় নি। এই অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে পরবর্তীতে ১৯১৭ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারীতে রাশিয়ায় বুর্জোয়া-গণতান্ত্রিক বিপ্লব সম্পন্ন হয়। সেই সময় চলছিলো প্রথম বিশ্বযুদ্ধ। যাতে অযৌক্তিকভাবে জার সরকার এই যুদ্ধে অংশ নিয়েছিলো শুধুমাত্র ধনীক শ্রেণীর স্বার্থরক্ষায়। এবং যুদ্ধের ব্যয় মেটানো হত সাধারণ জনগণের টাকায়। গণতান্ত্রিক বুর্জোয়া বিপ্লবে রুশ সোশ্যাল-ডেমোক্র্যাটিক শ্রমিক পার্টি (বলশেভিক) মিত্র হিসেবে কাজ করেছিলোযেগুলো মূলত মেনশেভিক ও সোশ্যালিস্ট-রেভলিউশনারি পার্টির সাথে পেটি-বুর্জোয়া পার্টি। বুর্জোয়া-গণতান্ত্রিক বিপ্লবের জন্য এটিই ছিলো সঠিক। বুর্জোয়া-গণতান্ত্রিক বিপ্লবই অক্টোবরের সমাজতান্ত্রিক বিপ্লবের সূত্রপাত ঘটায়। অন্যান্য বুর্জোয়া-গণতান্ত্রিক শক্তিসমূহের সাথে বলশেভিক পার্টির এই ধরনের কৌশলী অবস্থানের মধ্য দিয়ে অর্জিত জয় পার্টির মূল লক্ষ্য অর্থাৎ সমাজতান্ত্রিক সমাজে পৌঁছানোকে বহুগুণে তরান্বিত করে। ফলে অস্থায়ী দ্বৈত ক্ষমতার আত্মপ্রকাশ ঘটে।
প্রথম বিশ্বযুদ্ধ চলাকালীন ইউরোপের বিভিন্ন দেশে বিপ্লবী পরিস্থিতি বিরাজ করছিল। বুর্জোয়ারা নিজেদের মধ্যে সংঘর্ষে লিপ্ত এবং তাঁরা নিজ নিজ দেশের শ্রমিকশ্রেণীকে দেশাত্মবোধের আহ্বান জানাচ্ছেন যুদ্ধে শরিক হবার জন্য। লেনিন এই সময় পাল্টা আহবান রাখলেন। তিনি বললেন, "সাম্রাজ্যবাদী যুদ্ধকে গৃহযুদ্ধে পরিণত করো।" তিনি বললেন, স্বজাতি বুর্জোয়ার স্বার্থে শ্রমিক ও শ্রমজীবী জনগণ কামানের খোরাক হবে না, বরং এখনই উপযুক্ত সময় বন্ধুকটা নিজ দেশের বুর্জোয়ার দিকে উল্টো ঘুরিয়ে ধরার।  আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটেও বর্তমানে একই আবস্থা বিরাজমান। ডানপন্থী তথা আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টি ও জামাত মিলে তাদের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বে শ্রমিক শ্রেণিকে লাশের স্তূপে পরিণত করছে। কিন্তু শ্রমিক শ্রেণি লীগ-বিএনপির লাশের খোরাক হতে পারে  না।
 
সমাজতান্ত্রিক বিপ্লবঃ
বুর্জোয়া-গণতান্ত্রিক বিপ্লবের পর বলশেভিক পার্টি তার মূল লক্ষ্য সমাজতন্ত্র কায়েমের জন্য নতুন লড়াই-সংগ্রামে অবতীর্ণ হয়। কিছুদিন পূর্বের মিত্র মেনশেভিক ও সোশ্যালিস্ট-রেভলিউশনারি পার্টিগুলোর সাথে বলশেভিক পার্টির নতুন দ্বন্দ্ব দেখা দেয়। এই পেটি-বুর্জোয়া পার্টিগুলোর মতে, "সমাজতান্ত্রিক বিপ্লব ঘটতে পারে একমাত্র সেই সব দেশেই যেখানে উৎপাদন-শক্তিসমূহ উচ্চ স্তরে গিয়ে পৌঁছেছে এবং প্রলেতারিয়েত যেখানে জনসমষ্টির সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশ।" রাশিয়ার আর্থ-সামাজিক প্রেক্ষাপটের এই ধরনের ভূল বিশ্লেষণের বিরুদ্ধে বলশেভিক পার্টির নেতা ভ. ই. লেনিনকে শুধু বাহিরের পার্টিগুলোর সাথেই নয় সাথে সাথে তাত্ত্বিক যুদ্ধ চালাতে হয়েছে পার্টিরে অভ্যন্তরেও। বর্তমান পরিস্থিতি সংক্রান্ত প্রতিবেদন ও প্রস্তাবে লেনিন দেখান যে সমাজতান্ত্রিক বিপ্লবের জন্য বিষয়গত অবস্থা একচেটিয়া পুঁজিবাদের দ্রুত রাষ্ট্রীয়-একচেটিয়া পুঁজিবাদে পরিণত হওয়ার দ্বারা সৃষ্টি হয়েছে। লেনিন লিখেছেন, "বুর্জোয়া রাষ্ট্রযন্ত্র-কর্মকর্তারা, পুলিশ, আদালত ও সেনাবাহিনী শোষকদের বিশ্বস্ত প্রহরী, শ্রমজীবী জনগণের প্রতি এবং প্রলেতারীয় বিপ্লবের লক্ষ্যের প্রতি আপোষহীনভাবে বৈরিভাবাপন্ন; ক্ষমতার এই যন্ত্রটিকে ভাঙতে হবে এবং প্রলেতারিয়েতকে গড়ে তুলতে হবে এক নতুন রাষ্ট্রযন্ত্র, যা জনগণের সেবা করবে।"
সরকারের প্রধান কেরনস্কি হুকুম দিলেন সৈনিকদের মধ্যে বলশেভিক সংবাদপত্রগুলির প্রকাশনা ও প্রচার বন্ধ করার। সৈনিকদের সভা, কংগ্রেস ও সমাবেশ নিষিদ্ধ হল। অবসান হল বিপ্লবের শান্তিপূর্ণ কালপর্বের। খাদ্য ও নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রীর দাম বাড়িয়ে ও খাদ্যদ্রব্য কিনে মজুত করে রেখে কৃত্রিম দুর্ভিক্ষ সৃষ্টি করে শ্রমিকদের অনাহারে রাখা হয়। কোটিপতি রিয়াবুশিনস্কি বিদ্বেষভরে ঘোষণা করেছিলেন যে ক্ষুধার অস্থিসার বাহুই বিপ্লবের গলা টিপে ধরে তাকে শ্বাসরুদ্ধ করবে। এমতাবস্থায়, বুর্জোয়াশ্রেণীর সাথে এক চূড়ান্ত নিয়ামক লড়াই দরকার, শ্রমিকদের এই উপলব্ধির ফলে শ্রেণী সংগ্রামের ধরন ও পরিসরের পরিবর্তন-সংশোধন ঘটে। ফলে, ঘন ঘন স্বতঃস্ফূর্ত ধর্মঘটের জায়গায় আসে এক একটি গোটা শিল্প অথবা বড় বড় জেলার স্তরে সংগঠিত সংগ্রামী তৎপরতা। চামড়া-শ্রমিক, রেল-কর্মী, ল-কর্মী, বিপ্লবী সৈনিক, নাবিক, সুতাকল-শ্রমিক, খনি-শ্রমিক ও কৃষকদের নিজ নিজ ক্ষেত্রে লাগাতার ও একমুখী ধর্মঘট, শ্রেণিসংগ্রাম চলতে থাকে। নিপীড়িত জাতিসমূহও অনুরুপভাবে এবং তাশখন্দ ও ফিনল্যান্ডেও জাতীয় মুক্তির সংগ্রাম তীব্র হয়ে উঠেছিলো। সশস্ত্র বাহিনীর মধ্যে বলশেভিকরা ক্রমবর্ধমান মর্যাদা লাভ করতে থাকে।
ফেব্রুয়ারি বিপ্লবে জনগণের অর্জিত গণতান্ত্রিক স্বাধীনতাকে বলশেভিকরা সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণের সমর্থন লাভের জন্য ব্যাপক অভিযানের কাজে লাগায়। কলকারখানায়, সেনাবাহিনীর ব্যারাকে, রণাঙ্গনের পরিখায় এবং সোভিয়েতসমূহে তারা বোঝায় যে নতুন সরকারের আমলে যুদ্ধের সাম্রাজ্যবাদী চরিত্র বদলায়নি, দেখায় যে অস্থায়ী সরকার বুর্জোয়া নীতি অনুসরণ করছে এবং সোশ্যালিস্ট-রেভলিউশনারি ও মেনশেভিকদের আপসকামী মনোভাব তাদের বৃহৎ বুর্জোয়াশ্রেণীর সঙ্গে মৈত্রীবন্ধনের দিকে নিয়ে গেছে। শ্রমিক, সৈনিক, কৃষকদের ক্রমবর্ধমান রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা তাদের একথা বুঝতে সাহায্য করল যে বলশেভিকরা সঠিক।
দুটি সাম্রাজ্যবাদী গোষ্ঠীর প্রধান বাহিনীগুলো আটকে ছিলো যুদ্ধের ময়দানে, তখনই তারা রুশ প্রতিবিপ্লবের সমর্থনে এগিয়ে আসতে পারত না। সাম্রাজ্যবাদী যুদ্ধের বিরুদ্ধে সংগ্রাম পরিণত হয়েছে সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে সংগ্রামে, এবং তার দ্বারা রাশিয়ায় বিপ্লব সাহায্যপ্রাপ্ত হয়েছে। সময়ের সঠিকতার উপর জোর দিয়ে লেনিন বলেন, "অপেক্ষা করা হবে বিপ্লবের প্রতি অপরাধ।" রাশিয়ার বিরুদ্ধে রুশ ও বিদেশী সাম্রাজ্যবাদীদের মৈত্রী চূর্ণ করার এবং বিপ্লবকে দমন করার জন্য বুর্জোয়াশ্রেণী যে রক্তস্নানের প্রস্তুতি চালাচ্ছিল তা এড়ানোর একমাত্র উপায় ছিল সশস্ত্র বিপ্লবী অভ্যুত্থান।
প্রথমে পেত্রগ্রাদে শ্রমিক, নাবিক, ও বিপ্লবী সৈনিকদের সশস্ত্র অভ্যুত্থানে ২৫ অক্টোবর তারিখে জয়যুক্ত হয় বলশেভিকরা। পেত্রগ্রাদে সশস্ত্র অভ্যুত্থানের বিজয় এবং পৃথিবীর সর্বপ্রথম শ্রমিক-কৃষক সরকার গঠনের সংবাদ প্রতিনিধিরা বহন করে নিয়ে যায় বিশাল দেশের সকল প্রান্তে। এরপর মস্কোসহ প্রতিটি অঞ্চলে তীব্র লড়াই সংগ্রামের মধ্য দিয়ে বলশেভিকরা ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয়। সমগ্র রাশিয়ায় সোভিয়েত ক্ষমতা প্রতিষ্ঠিত হয়। বলপূর্বক উচ্ছেদ বা সশস্ত্র বিপ্লবের মাধ্যমে সামন্ত, বুর্জোয়া বা অন্যান্য শোষক শ্রেণিকে উৎখাত করা হয়। এই কাজটি খুব সহজ ছিলো না। বিপ্লবের প্রতিটি স্তরে সতর্কভাবে এগিয়ে যাওয়া ও বিজয় অর্জন করা ছিলো খুবই দুরুহ। কিছু কিছু ছোটখাট ভুলত্রুটি থাকলেও তার দ্রুত সংশোধনের মাধ্যমে বিজয়ের দিকে অগ্রসর হয়েছিল বলশেভিক পার্টি।

রুশ বিপ্লবের আন্তর্জাতিক প্রভাব
পৃথিবীতে রুশ বিপ্লব পুঁজিবাদের অবিসংবাদিত শাসনের অবসান ঘটিয়েছে। এই বিপ্লবের ফলে পৃথিবী বিভক্ত হয়ে গেছে দুটি সমাজ ব্যবস্থায়, সমাজতন্ত্র ও পুঁজিবাদে। সোভিয়েত সরকার ফিনল্যান্ডকে স্বাধীনতা প্রদান করেছিল। সেই ফিনল্যান্ডে শ্রমিকশ্রেণী বুর্জোয়া সরকারকে উচ্ছেদ করে জানুয়ারি ১৯১৮'র শেষ দিকে ফিনল্যান্ড সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক প্রজাতন্ত্র সৃষ্টি করেছিল। জার্মানীতে ১৯১৮ এ এক বিপ্লব রাজতন্ত্রের পতন ঘটিয়েছিল। অক্টোবর ১৯১৮ এ অস্ট্রো-হাঙ্গেরি জুড়ে বয়ে গিয়েছিল এক বিপ্লবের জোয়ার এবং তা রাজতন্ত্রের পতন ঘটিয়েছিল। এবং একই বছরের শেষ দিকে বুর্জোয়া-গণতান্ত্রিক বিপ্লব হাঙ্গেরিতে জয়যুক্ত হয়েছিল। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে শ্রমজীবী জনগণের সংগ্রামে বলিষ্ঠ উদ্দীপনা যুগিয়েছিল। লাতিন আমেরিকার বহু শহরে বিপ্লবী রাশিয়ার সঙ্গে সংহতিসূচক বিরাট বিরাট মিছিল ও সমাবেশ হয়েছিল। চীনের উপরে অক্টোবর বিপ্লব প্রচন্ড প্রভাব বিস্তার করেছিল। চীনা বুদ্ধিজীবি সমাজের প্রগতিশীল অংশ শ্রমিকশ্রেণী তাকে ইতিহাসে মহত্তম ঘটনা বলে আন্তরিকভাবে স্বাগত জানিয়েছিল। পরবর্তীতে চীনেও সশস্ত্র বিপ্লবের মধ্য দিয়ে বিপ্লব সংগঠিত হয়। ভারতের জনমতকে আলোড়িত করেছিল রুশ বিপ্লবের খবর। মধ্যপ্রাচ্যের জাতিসমূহ যেমন মিশর, সিরিয়া, ইরাক ও লেবাননে মুক্তি-সংগ্রামকে অক্টোবর বিপ্লব এক বলিষ্ঠ উদ্দীপনা যুগিয়েছিল। অক্টোবর বিপ্লব প্রাচ্যের সমস্ত জাতির ইতিহাসে আরম্ভ করেছিল এক নতুন অধ্যায়। তা সূত্রপাত করেছিল ঔপনিবেশিক ব্যবস্থার পতনের, ঔপনিবেশিক ও পরাধীন দেশগুলিতে নিয়ে এসেছিল জাতীয় মুক্তি বিপ্লবের যুগ।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর দ্রুত পুরো বিশ্ব ব্যবস্থা দুটো ব্লকে বিভক্ত হয়ে পড়ে। একদিকে মার্কিন নেতৃত্বে পুঁজিবাদীদের উন্মুক্ত বাজার নীতি। অন্যদিকে সোভিয়েত ইউনিয়নের নেতৃত্বে সাম্যবাদের আদর্শবাদ। শুরু হয় ঠান্ডা লড়াইয়ের যুগ। ১৯৪৫ থেকে ১৯৯১ সাল পর্যন্ত এ মেরুকরণ চলতে থাকে। দ্বিমেরু বিশ্ব ব্যবস্থায় ক্ষমতার ভারসাম্য থাকায় কোন জাতিক
নিষ্ঠুরভাবে নিগৃহীত হতে হয়নি। একটি পক্ষের রক্ত চক্ষু উপেক্ষা করতে পারেনি অন্য পক্ষকে। ফলে বিশ্ব বড় ধরনের যুদ্ধ বিগ্রহ ও বিপর্যয়ের হাত থেকে রক্ষা পায়। কোরিয়াকে দখল করে নিতে পারেনি এককভাবে যুক্তরাষ্ট্র। ভিয়েতনাম যুদ্ধ লাখ লাখ মানুষ প্রাণ হারিয়েছে কিন্তু পরাধীনতা মেনে নেয়নি তারা। সেই সময়ে সোভিয়েত ইউনিয়নের সক্রিয় উপস্থিতি না থাকলে ভিয়েতনামিদের একার পক্ষে যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে টিকে থাকা সম্ভব হতো না। এক পর্যায়ে যুক্তরাষ্ট্রকে বাধ্য হয়ে ভিয়েতনাম ছাড়তে হয়। সীমান্তে অবস্থিত কট্টর মার্কিন বিরোধী সমাজতন্ত্রী ক্ষুদ্র রাষ্ট্র কিউবাকে কখনো সরাসরি আক্রমনের সাহস করেনি আমেরিকা।

সোভিয়েত পতন এবং বর্তমান বিশ্ব রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটঃ
পার্টিতে সংশোধনবাদ-সুবিধাবাদের প্রশ্রয় ও গণতান্ত্রিক চর্চা কমে যাওয়ায় এবং প্রতিনিয়ত পুঁজিবাদী বিশ্বের নানামুখী ষড়যন্ত্রে প্রায় ৭ বছর স্থায়ী সোভিয়েত ইউনিয়নের পতন হয় ১৯৯১ সালে। এই পতন কিছু ব্যক্তি ও পার্টির সমস্যা। মার্ক্সবাদের ভুল নয়। সোভিয়েতের পতন পুঁজিবাদী সংকটকে কমায়নি বরং পুঁজিবাদ আরো বেশি আগ্রাসী হয়েছে। ফলে তার সঙ্কট বেড়েছে ও পতন অনিবার্য হয়ে উঠেছে আর তার বিপরীতে সমাজতান্ত্রিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থার প্রয়োজন আরো সুতীব্র হয়ে উঠছে। সোভিয়েত পতনের পর মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ আরো নগ্নভাবে তার আধিপত্য বিস্তার করছে। সে তার অভ্যন্তরী চরম সংকট মেটাতে দেশে দেশে যুদ্ধ-বিগ্রহ বাঁধিয়ে রাখার মরনপণ চেষ্টা করছে। ইরাক, আফগানিস্তান, লিবিয়া সহ বিভিন্ন দেশে এসব হামলা ও দখলদারিত্ব কায়েম করেও সে তার সংকট কাটাতে পারছে না। দেশে দেশে শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও সরকারি সেবা খাতে ব্যয় সংকোচন নীতির কারণে বিশ্বব্যাপী শুরু হয়েছে তীব্র আন্দোলন-সংগ্রাম। এসকল বৈশ্বিক বাস্তবতা আমাদের চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছে পুঁজিবাদ নয় সমাজতন্ত্রই হবে সঙ্কট মোচনের একমাত্র উপায়।

বাংলাদেশের বর্তমান প্রেক্ষাপটে রুশ বিপ্লবের তাৎপর্যঃ
স্বৈরশাসনের পর  বাংলাদেশে গত দুই দশকেরও বেশি সময়জুড়ে আওয়ামী লীগ-বিএনপি দ্বিদলীয় বুর্জোয়া শাসন চালু রয়েছে। এই দুই দলের সীমাহীন দুঃশাসন ও লুটপাটে গণতান্ত্রিক প্রতিটি প্রতিষ্ঠান পঙ্গুত্ব বরণ করেছে। এখন দেশে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ নেই বললেই চলে। দুই দলের প্রতি মানুষের যে মোহ ছিল তা কে গেছে। এই মূহূর্তে বাংলাদেশের আশু কর্তব্য হচ্ছে লীগ-বিএনপিকে উৎখাত করে সমাজতন্ত্র অভিমুখী গণতান্ত্রিক বৈপ্লবিক পরিবর্তন সাধন করা। আর তার জন্য দরকার দেশের সকল দেশপ্রেমিক জনতাকে সাথে নিয়ে একটি বাম-গণতান্ত্রিক ঐক্য গড়ে তোলা। জনগণের সামনে দুই দলের বাহিরে এই শক্তিকে দৃশ্যমান করে বিকল্প রাজনীতির জন্ম দেয়া এখন সময়ের চাহিদা।

আমাদের শিক্ষা এবং করণীয়ঃ
একটি সুশৃঙ্খলিত পার্টীর উপর সর্বোচ্চ গুরুত্ব প্রদান করতে হবে। এক্ষেত্রে পার্টিকে এর মৌল নীতিগুলোর ক্ষেত্রে কোনো আপোষ মনোভাব পোষণ করা যাবে না। গণতান্ত্রিক কেন্দ্রিকতা, সর্বহারা শ্রেণীর একনায়কত্ব, সমাজতন্ত্র ও শ্রেণিসংগ্রামকে  অবশ্যই আঁকড়ে ধরতে হবে। সংশোধনবাদ, সুবিধাবাদ, সংকীর্ণতাবাদ, মতান্ধতাবাদ,  সংস্কারবাদ, নৈরাজ্যবাদের বিরুদ্ধে তীব্র মতাদর্শিক সংগ্রাম পরিচালনা করতে হবে। লেনিনের পার্টি বিকশিত হওয়ার পেছনে প্রধান সংগ্রাম উক্ত মতবাদগুলোর বিপক্ষে ক্রমাগত নিরবচ্ছিন্ন লড়াই করে। বামপন্থী এবং নিজ পার্টিগুলোর প্রধান কাজ হচ্ছে এই লড়াইগুলো প্রতিনিয়ত পরিচালিত করা। আর শত্রু পার্টি বা শোষক ডানপন্থী পার্টিগুলোর সাথে প্রধান লড়াই হবে আন্দোলন, শ্রেণি সংগ্রাম, বিদ্রোহ, বিপ্লব এবং শ্রেণি যুদ্ধের মাধ্যমে। আবার সর্বহারার একনায়কত্ব কায়েম করার ক্ষেত্রে উক্ত দুই ধরনের লড়াই যুগপৎ ভাবেই চালিয়ে যেতে হবে।

লেনিনবাদকে স্তালিন সংজ্ঞায়িত করেছেন সাম্রাজ্যবাদের যুগের মার্কসবাদ হিসেবে। কারণ লেনিন শুধুমাত্র পুঁজিবাদী রাস্ট্রগুলোতে বিপ্লবের অপেক্ষায় বসে থাকেননি। তিনি মনে করতেন রাষ্ট্রের পরিস্থিতি বিবেচনায় রেখে যেকোন রাষ্ট্রেই কমিউনিস্ট বিপ্লব হতে পারে। অন্যদিকে কার্ল মার্কস মনে করতেন যেহেতু পুঁজিবাদী রাষ্ট্রগুলো অগ্রগামী তাই সেখানকার শ্রমিকরাই আগে বিপ্লব করবেন। এক্ষেত্রে বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে আমাদেরকে কর্মসূচি নির্ধারণের পাশাপাশি বিপ্লবের পক্ষে জনমত বৃদ্ধি করতে হবে। সেই কাজটি করতে হবে কমিউনিস্ট পার্টির ইশতেহারের হারের ভিত্তিতে।
স্তালিন বলেছিলেন, "মার্কসবাদকে ধ্বংস করতে হলে শ্রমিকশ্রেণীকেই ধ্বংস করতে হবে, কিন্তু শ্রমিকশ্রেণীকে ধ্বংস করা কখনোই সম্ভব নয়।" মার্কসবাদ হচ্ছে শ্রমিকশ্রেণীর রাজনৈতিক মতবাদ এবং তার বিশ্বদৃষ্টিভঙ্গি ও দর্শন। লেনিনের মতে মার্কসবাদ কোন ডগমা নয়, মার্কসবাদ হচ্ছে কর্মতৎপরতার পথ নির্দেশক।
আমাদের দেশের বাম রাজনীতি নিয়ে আমরা ব্যাপক আশাবাদী। বাংলাদেশের বামবলয় মার্কসবাদ- লেনিনবাদকে আঁকড়ে ধরে সামনে এগিয়ে যাবে এবং এদেশেও সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হবে, মেহনতি মানুষ চিরদিনের জন্য মুক্তি পাবে এটা আমরা বিশ্বাস করি।